২০০৮ সালের মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর মাঠে যুব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিলেন বিরাট কোহলি ও কেন উইলিয়ামসন। কি অবাক কাণ্ড! পাক্কা ১১ বছর পর ক্রিকেটের সবথেকে বড় মঞ্চে আবার মুখোমুখি দুজন। মাঝে দুজনই খেলেছেন দুই বিশ্বকাপ। কিন্তু প্রি-ফাইনাল মঞ্চে দুজনের দেখা হয়নি একবারও। ১১ বছর পর দুজনের যখন আবার দেখা হলো দুজনের কাঁধে জাতীয় দলের দায়িত্ব।
শেষ মুখোমুখিতে কি হয়েছিল তা ভুলে বসেছেন কোহলি। সেবার কেনের উইকেট পেয়েছিলেন। সাংবাদিকের কাছে জানার পর অবাক হয়ে বলেন, ‘সত্যিই আমি কেনের উইকেট পেয়েছিলাম! সত্যিই তো…’। তবে ওই ম্যাচে যে দুজন অধিনায়ক ছিলেন তা মনে আছেন নম্বর ওয়ান ব্যাটসম্যানের। জানালেন, আগামীকালের ম্যাচে কুয়ালালামপুর ফিরে আসবে ওল্ড ট্রাফোর্ডে।
‘আমার কেনের কথা মনে আছে। আমি নিশ্চিত কেনেরও মনে থাকবে। দুজন যখন আগামীকাল মাঠে নামব দুজনেরই পুরোনো স্মৃতি ফিরে আসবে। এটা ভেবে খুব ভালো লাগছে যে আমরা যুব ক্রিকেটে নিজ দলকে নেতৃত্ব দিয়েছি এবং ১১ বছর পর আবার জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছি। আমরা কেউই ওই সময়ে এমনটা ভাবিনি যে আমরা আবার একই মঞ্চে মুখোমুখি হব। কিন্তু ক্রিকেট আমাদেরকে আবার একই মঞ্চে ফিরিয়েছে। এটা দারুণ অনুভূতি।’ – বলেছেন ভারতের অধিনায়ক।
এই সময়ের ‘ফ্যান্টাস্টিক ফোর’ বলা হয় স্টিভেন স্মিথ, কেন উইলিয়ামসন, বিরাট কোহলি ও জো রুটকে। কার থেকে কে এগিয়ে আছেন সেই বিতর্ক চলছে বেশ কয়েক বছর ধরে। তবে বিরাট কোহলি ও কেন উইলিয়ামসনকে দৃঢ়চেতা মনোভাবের কারণে আলাদা করে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি তারা তিন ফরম্যাটেই দলকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। বাকিদের মধ্যে স্মিথ বল টেম্পারিং কাণ্ডে জড়িয়ে হারিয়েছেন অধিনায়কত্ব। জো রুট ইংলিশদের সাদা পোশাকের দায়িত্বে।
তাইতো বিরাট কোহলি ও কেন উইলিয়ামসনের ওপরে সকল আলোকসজ্জা, সকল লাইমলাইটের আলো। ১১ বছর আগে কোহলির টিম ইন্ডিয়ার কাছে যুব বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল হেরেছিল উইলিয়ামসনের নিউজিল্যান্ড। পরবর্তীতে কোহলিরা জিতেছিল বিশ্বকাপ। এবারও কি কোহলির ভারত সেই পথে এগিয়ে যাচ্ছে? ক্রিকেট বোদ্ধারা বলছেন, এবার বিশ্বকাপ জয়ের সম্ভাবনা সবথেকে বেশি ভারতের। দলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভারসাম্যর কারণে প্রতিটি বিভাগে তারা এগিয়ে।
বিশ্বকাপের প্রথম পর্বের লড়াইয়ে দুজনের দেখা হয়নি মাঠের লড়াইয়ে। বৃষ্টিতে পণ্ড হওয়া ম্যাচে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছিল দুই দল। আগামীকাল তারা মুখোমুখি হচ্ছে ওল্ড ট্রাফোর্ড ক্রিকেট গ্রাউন্ডে। এখানেও রয়েছে বৃষ্টির সম্ভাবনা। সবথেকে বিস্ময়কর তথ্য হচ্ছে, ২০০৮ সালের সেমিফাইনালের রোমাঞ্চকর ম্যাচে বৃষ্টি আইনে ম্যাচ জিতেছিল ভারত। আবার কি একই পথে এগোচ্ছে দুই দল।
২০১১ সালে কোহলি নিজের প্রথম বিশ্বকাপে জিতেছিলেন শিরোপা। কেন উইলিয়ামসন ২০১৫ সালে রানার্সআপ হয়েছিলেন। কোহলির ভাণ্ডারে বিশ্বকাপের মুকুট থাকলেও উইলিয়ামসন এখনও সাফল্যের মুকুট পাননি। বয়সভিত্তিক দলের প্রতিশোধ নিয়ে উইলিয়ামসন এবার শিরোপার লড়াইয়ে এগিয়ে যেতে পারেন কিনা সেটাই দেখার। তবে ১১ বছর আগের দুই ‘তরুণের’ লড়াই বিশ্বকাপের মঞ্চে নতুন উন্মাদনা ছড়াচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যে উন্মাদনায় আবেগতাড়িত কোহলি-উইলিয়ামসন দুজনই।