সিরাজগঞ্জে বিয়ের মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কায় নিহত বরযাত্রী সুমনের লাশ দেখে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার বাবা মুছা শেখ মারা গেছেন। সোমবার (১৫ জুলাই) রাতে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ছেলের লাশ দেখতে গিয়ে মারা যান তিনি।
এর আগে সোমবার বিকেল সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার সলপ স্টেশনের পাশের অরক্ষিত রেল ক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় বর-কনে ও শিশুসহ অন্তত ১০ জন নিহত হন। মাইক্রোবাসের চালক ও হেলপার বাদে বাকিরা সবাই আত্মীয়।
রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে মাইক্রোবাসটির ধাক্কা লাগে। এ ঘটনায় ট্রেনের যাত্রীসহ আরও ১০ জন আহত হয়েছেন। হাসপাতালে ছেলের মরদেহ দেখতে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ১১ তে।
নিহতরা হলেন-সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামের মো. আলতাব হোসেনের ছেলে বর রাজন শেখ (৩৫), তার শিশু ভাগিনা কান্দাপাড়া উত্তরপাড়ার মো. শামিম হোসেনের ছেলে আলিফ হোসেন (১১), উল্লাপাড়া চরঘাটিনা গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা মৃত আব্দুল গফুরের মেয়ে কনে সুমাইয়া খাতুন (২১), তার আত্বীয় একই গ্রামের মো. আশরাফ আলীর স্ত্রী মমতা খাতুন (৩৫), জেলা সদরের সর্দারপাড়া গ্রামের আলতাব হোসেনের ছেলে মো. শরিফুল ইসলাম শরিফ (৩২), সয়ধানগড়া মধ্যপাড়ার সুরত আলীর ছেলে আহাদ আলী (১৯), রামগাঁতী গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে আব্দুস সামাদ (৪৫) ও তার ছেলে শাকিল আহম্মেদ (১৯), সয়ধানগাড়া (মিলন মোড়) মহল্লার মৃত একরামুল হকের ছেলে মাইক্রোবাস চালক নুরে আলম স্বাধীন (৪০), রায়গঞ্জের পাঙ্গাসী ইউনিয়নের কৃষ্ণদিয়া গ্রামের আলম শেখের ছেলে খোকন শেখ (২২) এবং কালিয়া হরিপুর চুনিয়াহাটির মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে ভাষান শেখ (৬৫)।
উল্লাপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মোস্তফা হতাহতের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, উন্মুক্ত লেভেল ক্রসিং পারাপারের সময় বিয়ের বহরের একটি মাইক্রোবাস পদ্মা এক্সপ্রেসের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে বেশ কিছুদূর পর্যন্ত ছেচড়ে যায়। এতে ১০ জন মারা যান। নিহতদের মধ্যে আটজনই এক পরিবারের। অন্যরা মাইক্রোবাসের চালক ও হেলপার। দুর্ঘটনায় মাইক্রোবাসটি দুমড়ে মুচড়ে যায়।
তিনি আরও জানান, অরক্ষিত রেল ক্রসিংয়ের কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। ওই ক্রসিংয়ে কোনো ব্যারিয়ার বা বার্জ ছিল না। এমনকি সেখানে রেল বিভাগের কোনো পাহারাও নেই।