শেখ মুজিব মানেই শক্তি, সাহস আর প্রেরণা


‘মুজিব মানে আর কিছু না, মুজিব মানে রক্ত
মুজিব আমার শক্তি সাহস,আমি মুজিব ভক্ত।’

– কবি নির্মলেন্দু গুণ তার একটি ছড়ায় এভাবেই প্রকাশ করেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি অফুরন্ত ভালবাসা, শ্রদ্ধা আর ভক্তি। কবির হাত ধরে উঠে আসে সত্য আর বাঙালির ধারাবাহিক ঐতিহ্য, সংস্কৃতি আর কীর্তি গাঁথার কাব্য। বাঙালি জাতির রয়েছে হাজার বছরের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস আর সেই ইতিহাসের সোপান বেয়ে, সময়ের হাত ধরে মহানায়কদের আগমন ঘটেছে। কালের বিচারে সেসব মহানায়কদের কেউ কেউ নিজ কর্মের জন্য আমাদের মধ্যে টিকে আছেন, আবার কেউ কেউ স্বীয় কর্মের জন্য ইতিহাসের পাতায় ধূসর হয়ে গেছেন।

২০২০ সাল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ। এর আগে আরও একজন বাঙালি মনীষীর জন্মশতবর্ষ এসেছিল। কিন্তু সেটা বাঙালি ঘটা করে পালন করতে পারেনি। সালটি ছিল ১৯৬১। মনীষীর নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বাঙালির আত্মপরিচয়ের জন্য দেশে এবং বিদেশে এই দুটি নাম অপরিহার্য। ১৯৬১ সালে সময়টি ছিল বাঙালির জন্যে এক ‘কালের’ সময়। তখন রবীন্দ্রনাথ নিষিদ্ধ। তার গান-সাহিত্য নিষিদ্ধ। এই নিষিদ্ধের কাল থেকে বাঙালি জাতিকে, বাঙালির কবি রবীন্দ্রনাথকেও যিনি মুক্ত করলেন তিনিই আমাদের বঙ্গবন্ধু। এ উপলক্ষে আজ ১৯ জুলাই শুক্রবার পুরানলেনস্থ শ্রুতি প্রাঙ্গণে বিকাল ৪টায় শ্রুতি সিলেট আয়োজন করে বছরব্যাপী জাতির জনকের জন্মশতবর্ষের উদ্বোধনী পর্ব’র। এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ভবতোষ বর্মণ রানা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা রায়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে সদস্যসচিবের বক্তব্য নিয়ে আসেন শ্রুতি সদস্যসচিব সুকান্ত গুপ্ত। অত্রি ভট্টাচার্য এবং তামান্না প্রত্যাশার পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- শ্রুতি সমন্বয়ক সুমন্ত গুপ্ত, ফারিহা মমতাজ, শ্রাবণ আচার্য্য, সন্দীপ রায়, সুস্মিতা ভট্টাচার্য।

আবৃত্তি, গান এবং পাঠে অংশ নেন রিয়া চক্রবর্তী, স্রোতস্বিনী স্নেহা, অর্চিতা ভট্টাচার্য, চপল কুন্ড, ফারিহা তাহসিন প্রিমা, শেখ নাজমিন আক্তার আইভি প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, শত শত বছরের শোষণ-বঞ্চনার অধীনে থেকে বাঙালি যখন নিজস্ব পরিমণ্ডল থেকে ক্রমে পেছনে সরে যাচ্ছিল ঠিক সেইসময় পেছনের সব মহাপুরুষদের কীর্তিগাঁথাকে ম্লান করে দিয়ে পাদ-প্রদীপের আলোয় উদ্ভাসিত হলেন তিনি। দীর্ঘদেহী মানুষ সিংহের মতো গর্জনে তিনি ঘুমিয়ে পড়া বাঙালিকে পুনরায় জাগিয়ে তুললেন। বাঙালি জাতিকে একত্রিত করলেন, করলেন নবধারায় উজ্জীবিত। শোষণ-বঞ্চনার ঘেরাটোপ থেকে বাঙালি জাতিকে তিনি নতুন করে স্বপ্ন দেখাতে শুরু করলেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই মহাপুরুষ অন্ধকার অমানিষা থেকে এক আলোর পথ দেখালেন বাংলার মানুষকে। তার অঙুলি হেলনে সাড়ে সাত কোটি বাঙালি পাকিস্তানি শাসকের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়লেন যার যা আছে তা নিয়ে। অনুষ্ঠান শেষে শতাধিক শিশু কিশোরদের হাতে জাতির জনকের প্রতিকৃতি তুলে দেয়া হয়। এবং বছরব্যাপী কার্যক্রমের সময়সূচি জানানো হয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *