তুহিন হত্যায় শিক্ষকরাও জড়িত অভিযোগ বোনের


তুহিনকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। এর সাথে শিক্ষকরাও জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন সিলেট কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সহপাঠীদের হাতে খুন হওয়া তানভীর হোসেন তুহিনের বোন সাবেরা খানম উর্মি। শনিবার বিকেল ৩টায় এলাকাবাসী আয়োজিত প্রতিবাদ সভার বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন তিনি।

এসময় তুহিনের বোন উর্মি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার ভাইকে তার সহাপাঠিরা আঘাত করে গুরুতর আহত করার পর প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষক তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাননি। এমনকি হাসপাতালে নেওয়ার পর খবরও নেননি। আমাদেরও তারা তাৎক্ষণিক জানাননি। এসময় শিক্ষকদের নিরবতা রহস্যেজনক বলে আমাদের কাছে মনে হয়েছে। ঘটনার প্রায় ৩ ঘন্টা পর শিক্ষকরা আমাদেরকে ফোন দিয়ে জানান হাসপাতালে যাওয়ার জন্য। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখি দীর্ঘ ৩ ঘন্টা ধরে আমার ভাই রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালের মাটিতে পড়ে আছে। তার চিকিৎসার জন্য ডাক্তাররা কোন সহযোগিতা করছেন না। উপস্থিত শিক্ষকদের কোন তৎপরতাও দেখা যায়নি।

উর্মি বলেন, আমাদের আহাজারি দেখে একজন ডাক্তার আমার ভাইয়ের চিকিৎসা শুরু করে অবস্থা ভাল জানিয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র নিয়ে যেতে বলেন। তিনি বলেন, আমার ভাইকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার দুইদিন আগে এই সন্ত্রাসীরা আমার ভাইকে বিদ্যালয়ের একটি বাথরুমে আটকে রাখে। এ ঘটনায় শিক্ষকরা কোন বিচার করেননি বরং তারা নিরব ছিলেন। আমার ভাই হত্যার পিছনে শিক্ষদের অবহেলাও প্রধান কারণ।

উর্মি আরও বলে, আমার আর কোন ভাই নেই, একমাত্র ভাইকে এই সন্ত্রাসীরা তুচ্ছ ঘটনায় নির্মম ভাবে পিটিয়ে খুন করেছে। একমাত্র ভাইকে হারিয়ে আমার মা আজ বাকরুদ্ধ। পাগলের মত আচরণ করছেন। বৃদ্ধ বয়সে বাবা বিদেশের মাটিতে কঠোর পরিশ্রম করছেন শুধু আমি ও আমার ভাইয়ের জন্য। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।

শনিবার বিকেল ৪টায় গোলাপগঞ্জ উপজেলার লক্ষীপাশা ইউনিয়নের কোনাচর বাজারে এলাকাবাসী উদ্যোগে তুহিন হত্যার বিচারের দাবীতে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্টিত হয়। এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিত্ব জিয়াউল ইসলাম জিতু মিয়ার সভাপতিত্বে ও তরুণ সমাজসেবী লায়েছ আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এ প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন গোলাপগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি আব্দুল আহাদ, লক্ষীপাশা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাহমুদ আহমদ, প্রবীণ শিক্ষক নির্মল কান্তি দাশ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শাহান আহমদ, ইউপি সদস্য তারেক আহমদ, প্রবীণ রাজনীতিবিদ আরিফ আহমদ মজনু, সমাজসেবী আব্দুর রহিম নান্টু, ক্রীড়া সংগঠক ময়নুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা সোনা মিয়া, ইউপি সদস্য ইসমাইল আলী, অস্তর আলী মেম্বার প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার (২৪ জুলাই) জুতা নিয়ে তর্কাতর্কি থেকে সিলেট সরকারী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রশিক্ষনার্থী তুহিনকে পিটিয়ে হত্যা করে তার কয়েকজন সহপাঠি। তুহিন গোলাপগঞ্জ উপজেলার হেতিমগঞ্জের কোনাচর দক্ষিণভাগ পলিকাপন গ্রামের মানিক মিয়ার পুত্র।