অনলাইন নির্ভরতায় ভুল সাংবাদিকতা বাড়ছে


দৈনিক জাগরণের সম্পাদক ও প্রেস ইনিস্টিটিউট অব বাংলাদেশ পিআইবির চেয়ারম্যান আবেদ খান বলেছেন, সাংবাদিকতার পট পরিবর্তন হয়ে গেছে। এখন সাংবাদিকতা অনেকটা অনলাইন নির্ভর হয়ে পড়েছে। এতে ভুল সাংবাদিকতা বাড়ছে।

শনিবার (২৭ জুলাই) সিলেটের বিশিষ্টজনের সাথে এক সৌহার্দ্য আড্ডায় এসব কথা বলেন তিনি।

আবেদ খান বলেন, ‘‘একটি ভুল সংবাদ সমাজ সভ্যাতায় সর্বনাশ ডেকে আনে। অনলাইন সাংবাদিকতায় সেই ভুল সাংবাদিকতারই প্রসার ঘটছে। একটি ভুল নতুন নতুন ভুলের জন্ম দেয়। দেশে চলমান গুজব ছেলে ধরা যার বাস্তব উদাহরণ।’’

তিনি বলেন, এই ভুল তথ্যের সাংবাদিকতার কারণে কার্ড নির্ভর সাংবাদিকতার একটি অপসংস্কৃতি বিরাজ করছে সর্বত্র। যা মূল সাংবাদিকতার সাথে সাংঘর্ষিক।

আবেদ খান বলেন, তফাজ্জুল হক মানিক মিয়া কিংবা জহরুল হক চৌধুরীর মতো সাংবাদিকতা এখন আর নেই। কালো টাকার মালিকরা সংবাদপত্রের নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠায় সম্পাদকরা প্রধান নির্বাহীর ভূমিকায় কাজ করছেন। এতে সার্বিকভাবে সাংবাদিকতার নৈতিকতা নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে।

সিলেটের সকল শ্রেণীপেশার সুধীজনদের উপস্থিতিতে প্রণবন্ত এ আড্ডায় আবেদ খান আরো বলেন, দেশের সাংবাদিকতা মূল আদর্শ থেকে সরে পড়ছে। সংবাদপত্রের বাইরের লোকজন বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সংবাদপত্রের মালিক হওয়ার ফলে পেশাদার সাংবাদিকতার বিলুপ্তি ঘটছে। সাংবাদিকরাও মালিকপক্ষের কথা বলতে গিয়ে সাংবাদিকতার মূল ধারা থেকে সরে যাচ্ছেন।

প্রকাশিতব্য জাগরণ বিষয়ে আবেদ খান বলেন, অনলাইন ভার্সন নিয়ে জাগরণের পথ চলা শুরু হয়েছে। অবশ্যই প্রিন্ট ভার্সনে যাবে জাগরণ।  বিলম্বের মানে হচ্ছে নিজেকে আরো ভালভাবে তৈরী করে নেয়া।

পথিতযশা এ সাংবাদিক বলেন, ‘‘আমি একটি ভিন্ন জাগণের স্বপ্ন দেখছি। যে জাগরণ ব্যাক্তি স্বার্থের অনেক উর্ধ্বে থেকে মানবিকতার কথা বলবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলবে। মুক্ত চিন্তার কথা বলবে। আমি মালিকপক্ষ নিয়ন্ত্রিত চলমান তথাকথিত নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। আমি যে জাগরণের স্বপ্ন দেখি তা কেবলই মুক্তি যুদ্ধ আর মনবিক চেতনার উৎকর্ষ সাধনেই কাজ করবে। যে জাগরণ শুধু মানবতার কথা বলবে। সাম্প্রদায়িকতার বিরদ্ধে লড়াই করবে। সকল প্রতিকুলতা ডিঙ্গিয়ে  জাগরণ কেবল সত্যকেই তুলে ধরবে।’’

দৈনিক জাগরণের সিলেট প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম রোকনের সঞ্চালনায় আড্ডর শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেটের বিশিষ্ট সাংবাদিক বালাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ লিয়াকত শাহ ফরিদী, স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাগরণের নির্বাহী সম্পাদক দুলাল আহমেদ চৌধুরী।

সৌহার্দ্য আড্ডায় আরো বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, নর্থ ইস্ট ইউনির্ভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর আতফুল হাই শিবলী, দৈনিক সিলেটের ডাকের নির্বাহী সম্পাদক লেখক গবেষক আব্দুল হামিদ মানিক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব বিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রসাশন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফজলে এলাহী মোহাম্মদ ফয়সাল, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার বদরুল ইসলাম শোয়েব, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা চেয়ারম্যন মোহাম্মদ আবু জাহিদ, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমেদ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রফিক আহমেদ, সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক জগলু চৌধুরী, জগন্নাথপুর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়াম্যান সাংবাদিক মুক্তাদির আহমেদ মুক্তা, সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ, কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সহ-সভাপতি সেলিম আউয়াল, সিলেট ক্রিড়া লেখক সমিতির সভাপতি মান্না চৌধুরী, ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর আহমদ, দৈনিক প্রথম আলোর সিলেট প্রতিনিধি গবেষক সুমন কুমার দাস, সময় টিভির সিলেট প্রতিনিধি আব্দুল আহাদ, প্রকাশক রাজীব চৌধুরী প্রমুখ।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *