কমলগঞ্জে স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে ৩দিন ধরে অনশনে রিমা


মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের জালালিয়া গ্রামে স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে এক প্রেমিকের বাড়ির বারান্দায় বসে অনশন শুরু করেছেন এক নারী। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক জল্পনা কল্পনা চলছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জালালিয়া গ্রামের মৃত মোবারক আলীর ছেলে দুবাই প্রবাসী ইয়াওর আলীর সাথে নরসিংদী জেলার খালার চর ইউনিয়নের মানারা কান্দি গ্রামের ফয়েজ উদ্দিনের মেয়ে রিমা আক্তারের মধ্যপ্রাচ্যের দুবাইয়ে একই কোম্পানিতে কর্মরত থাকা অবস্থায় প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। দুজন দেশে এসে নরসিংদি আদালতে ২০১৭ সালের ১৯ জুলাই তারিখে তাদের বিয়ে হয়।

বিয়ের পর মাস দেড়েক নরসিংদীতে প্রেমিক একটি বাসা ভাড়া রেখে ঘর সংসার করে আবার দুজন বিদেশ পাড়ি জমায়। সেখানে গিয়ে মেয়ের রোজগারের প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা নিজের কাছে রেখে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাড়িতে তুলে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্ত্রীকে দেশে পাঠিয়ে দেয় স্বামী ইয়াওর আলী। স্ত্রী রিমা আক্তার স্বামীর এমন কথা শুনে দেশে আসার পরে বারবার চেষ্টা করেও আর স্বামীর সাথে যোগাযোগ করতে পারেননি।

এরপর রিমা আক্তার দুবাইয়ের কোম্পানির অন্যান্য লোক মারফত জানতে পারেন যে তার স্বামী কিছুদিন আগে দেশে এসেছেন। এ খবর পেয়ে কোর্ট ম্যারেজকালীন সময়ে স্বামীর দেয়া এ এলাকার বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মোবাইল ও স্বামীর পারিবারিক মোবাইলে এবং স্থানীয় মেম্বার হায়দার আলীর মোবাইল নাম্বারে কল দিয়ে এলাকার লোকজনকে বিস্তারিত জানান।

অবশেষে গত ২৬ জুলাই শুক্রবার দুপুর ২ টা থেকে কমলগঞ্জের জালালিয়া গ্রামে স্বামীর বাড়ির বারান্দায় এসে স্ত্রীর মর্যাদা দেয়ার দাবীতে অনশন শুরু করেন। এ নিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং দফায় দফায় ছেলে পক্ষের সাথে মেয়ে পক্ষের এ এলাকায় অবস্থানকারী আত্মীয়-স্বজনের সাথে বিষয়টি মীমাংসার জন্য গ্রাম্য মাতব্বররা সালিশ বৈঠক বসান। প্র

অবস্থা বেগতিক দেখে ছেলে ইয়াওর আলী ৬ মাস আগে পাশের মথুরাপুর গ্রামে বিয়ে করা দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান।

শনিবার রাত ৮টায় আবারো স্থানীয় ইউপি সদস্য হায়দার আলীর বাড়িতে বিষয়টি আপোস মীমাংসার জন্য মেয়েকে নিয়ে সালিশ বসেন। মে অবশেষে মেয়েটি কমলগঞ্জ থানা পুলিশের শরণাপন্ন হবে জানালে প্রভাবশালী পরিবারটি পুলিশি ভয়ে মেয়েটিকে আবারো তাদের জিম্মায় নিয়ে যায়। রোববার সন্ধ্যা ৭টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মেয়েটি ওই বাড়িতেই অবস্থান করছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে স্থানীয় ইউপি সদস্য হায়দার আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমরা বিষয়টি মেয়ের সাথে থাকা কাগজপত্র দেখে বারবার সমাধান করার জন্য স্বামীর পরিবারকে অনুরোধ করলেও তাতে তারা কোন ধরনের কর্ণপাত করেনি।

অনশনকারী রিমা আক্তার জানান, পরিবারের শাশুড়িসহ অন্যান্য লোকজন তাকে বাড়ি থেকে সরে যাবার জন্য বার বার হুমকি দিচ্ছে। এতে করে তাঁর জীবনের নিরাপত্তা হুমকিতে রয়েছে। স্বামী ইয়াওর আলীর মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে কমলগঞ্জ থানায় কোন ধরনের লিখিত অভিযোগ কেউ করেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।