জেলা যুবলীগের নেতৃত্বে আসছেন কারা


প্রায় ১৬ বছর সিলেট জেলা যুবলীগের সম্মেলন হতে যাচ্ছে আজ। আজ সকালে নগরীর রেজিস্টারি মাঠে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ বিরাজ করছে।

কারা আসছেন যুবলীগের নেতৃত্বে এ নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা। তবে যারাই নির্বাচিত হোন, তা যেনো ভোটের মাধ্যমে হয় এ প্রত্যাশা দলটির নেতাকর্মীদের। সমঝোতার কমিটি আর চান না তাঁরা।

দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় এবারে যুবলীগের সম্মেলনে শীর্ষ দুই পদে প্রার্থী সংখ্যা বেড়ে গেছে।

জানা যায়, এখন পর্যন্ত সভাপতি পদে প্রার্থী হতে প্রচারণা চালাচ্ছেন ১১ বছর ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বে থাকা শামীম আহমদ, সিলেট মহানগর যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক মো. সেলিম উদ্দিন, সাবেক ছাত্র নেতা ও বিশ্বনাথ রামপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. আলমগীর ও মহানগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আসাদুজ্জামান আসাদ।

সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন- সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, জেলা পরিষদের সদস্য শামিম আহমদ, খাদিমনগর ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আফসর আহমদ ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জাহিদ সারোয়ার সবুজ।

সোমবার (২৯ জুলাই) অনুষ্ঠিত হবে সিলেট জেলা যুবলীগের সম্মেলন। সম্মেলনের প্রথম পর্বে আলোচনা সভা ও ২য়পর্বে অনুষ্ঠিত হবে কাউন্সিল। জেলা যুবলীগের এই সম্মেলনে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করতে চান প্রার্থী ও ভোটাররা। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেতা নির্বাচন চান কেন্দ্রীয় যুবলীগের নেতারাও। ১৬ বছর ধরে ঝিমিয়ে পড়া যুবলীগের চাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনতে ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে যোগ্য নেতা নির্বাচন করেত চান ভোটাররাও।

ইতোমধ্যে সম্মেলনের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। কাউন্সিলরদের মধ্যে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীরা। নগরজুড়ে তাদের সমর্থনে টানানো হয়েছে ফেস্টুন, ব্যানার ও পোস্টার। এখন শুধু অপেক্ষার পালা কারা আসছেন নেতৃত্বে।

সিলেট জেলা যুবলীগের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সম্মেলনে সভাপতি পদপ্রার্থী শামীম আহমদ বলেন, ভালোভাবে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। মহানগর যুবলীগের সম্মেলন দেখেই সবাই বুঝতে পেরেছেন আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চান। আমিও চাই গণতান্ত্রিক ভাবেই একজন ভোটার তার নেতা নির্বাচন করুক। সভাপতি পদে আমিসহ চার জন প্রার্থী আছি। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সমর্থন যেদিকে থাকবে সেই বিজয়ী হবে।

আরেক সভাপতি প্রার্থী মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, ঝিমিয়ে পড়া যুবলীগকে চাঙ্গা করতে ও আগামিতে সুন্দর একটি সময় উপহার দিতে চাই আমি। আশা করছি সুন্দরভাবে ভোটগ্রহণ হবে। ভোটাররা ভোট প্রদান করে নেতা নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের অধিকার ফিরে পাবেন। সুন্দর একটি সম্মেলন সবাইকে উপহার দেওয়ার জন্য আমরা সবাই কাজ করছি।

জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতা জাহাঙ্গীর আলম। সম্মেলনের দুদিন আগে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যানের সাথে তাঁর আলিঙ্গনের একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ছবি শেয়ার দিয়ে জাহাঙ্গীর অনুসারীরা বলছেন, জাহাঙ্গীরকেই পছন্দ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, যুবলীগকে সচ্ছল রাখার জন্য আমি চাই তরুণ যুব নেতারাই নেতৃত্বে আসুক। সেই লক্ষেই আমি প্রার্থী হয়েছি। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়েছি। উপজেলা পর্যায়ের সাবেক ছাত্রনেতা থেকে শুরু করে সকলের কাছ থেকে ভালো সারা পেয়েছি। সকলের দোয়া থাকলে কেউ বিজয় ছিনিয়ে নিতে পারবে না। কারণ আমি মনে করি বর্তমান প্রেক্ষাপটে যুবলীগের হাল ধরতে তরুণ সাবেক ছাত্রনেতারাই বেশি যোগ্য।

জেলা যুবলীগের আরেক সম্পাদক প্রার্থী শামিম আহমদ বলেন, প্রস্তুতি অনেক ভালো। কোনো ধরনের সমস্যা নেই। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়ই নেতা নির্বাচন হবে। ভোটাররাই যোগ্য নেতা নির্বাচন করবেন।

জয়ের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন আরেক সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আফসর আহমদও।

সোমবার সকাল ১১টায় সিলেট ঐতিহাসিক রেজিস্টারি মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলন উদ্বোধন করবেন যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ ওমর ফারুক চৌধুরী।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি। প্রধান বক্তা থাকবেন- যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো: হারুনুর রশীদ।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি থাকবেন- নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, হাফিজ উদ্দিন আহমদ মজুমদার এমপি, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েছ এমপি, যুবলীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য এড. বেলাল হোসাইন, ড. আহমেদ আল কবির, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক আতিক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এড. লুৎফুর রহমান, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমেদ।

প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালের পর সিলেট জেলা যুবলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা হয়নি। ২০০৩ সালে যুবলীগের সম্মেলন হলেও ভোট হয়নি। সমঝোতার মাধ্যমেই ওই সম্মেলনে জগদীশ চন্দ্র দাসকে সভাপতি ও আজাদুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করা হয়। এরপর আরে কোনো সম্মেলন হয়নি জেলা যুবলীগের।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *