অপহরণ করে নির্যাতন বিশ্বনাথে দেবর ও ভাসুর জেল হাজতে


সিলেটের বিশ্বনাথে যুক্তরাজ্য প্রবাসী চাচাতো ভাই গৌছ আলী ওরফে আরফান উল্লাহর স্ত্রী হওয়ারুন নেছাকে অপহরণ ও নির্যাতন মামলায় দেবর ও ভাসুরকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

সোমবার (২৯ জুলাই) বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাদের দুজনকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

আগের দিন রোববার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যায় বিশ্বনাথ বাজার থেকে তাদের দুজনকে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তার হওয়া দেবর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রফিক আলী (৩৬)। তিনি উপজেলার শাহজির গাঁওয়ের প্রয়াত আরজান আলীর ছেলে।

তবে ৪ বছর আগে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।

দীর্ঘদিন স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপজেলা কমিটি না হওয়ায় এখনও তিনি নেতা হিসেবেই আছেন বলে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বদরুল আলম জানিয়েছেন।

আর ভাসুর হচ্ছেন একই গ্রামের প্রয়াত হাছন আলীর ছেলে ব্যবসায়ী মখলিছ আলী (৬৫)। অন্যদিকে মামলার বাদী প্রবাসী গৌছ আলী ওরফে আরফান উল্লাহর স্ত্রী হওয়ারুন নেছা শাহজিরগাঁওর পার্শ্ববর্তী রজকপুর গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধসহ বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে উভয়পক্ষে মামলাও রয়েছে। এরই জের ধরে স্বামীর সম্পত্তি থেকে বিতাড়িত করতে ১৩ মার্চ হাওয়ারুন নেছাকে অপহরণ করেন দেবর রফিক আলীসহ অন্যান্যরা। ওই দিন তার ঘরে থাকা নগদ এক লাখ টাকা, ১০ ভরি স্বর্ণালংকার, ন্যাশনাল ও প্রাইম ব্যাংকের ২টি, এবং ইসলামী ব্যাংক ও ডাচ-বাংলা ব্যাংকের একটি করে আরও দুটি চেক জোর করে নেওয়া হয়। এ সময় দেবর রফিক আলী সর্বমোট ১০টি খালি চেকে জোরপূর্বক ভাবী হাওয়ারুনের স্বাক্ষরও নেন।

এছাড়া ১৩ মার্চ অপহরণের পর থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত দীর্ঘ একমাস একাধিক বাসায় রেখে রফিক আলী তাকে (হাওয়ারুন) শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন। দীর্ঘ একমাস পর হাওয়ারুনের চাচাতো ভাই কামালপুর গ্রামের ছবর আলী খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে পরবর্তীতে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এ ঘটনায় হাওয়ারুন নেছা বাদী হয়ে থানায় ৪৪৮/৩২৩/৩৪৪/৩৬৫৩৭৯/৩৮০/৩৮৬/৫০৬(২)/১৪৪/৩৪ দণ্ডবিধি মোতাবেক লিখিত অভিযোগ দেন।

তদন্ত শেষে ২৭ জুলাই ওই অভিযোগকে মামলা হিসেবে গণ্য করা হয়, (মামলা নং ২৩)। মামলায় দেবর রফিক আলীকে প্রধান আসামি করে প্রবাসী স্বামী, ভাসুর ও দেবরসহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।

বিশ্বনাথ থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম এ প্রতিবেদককে বলেন, পুলিশি তদন্তে অপহরণের ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় মামলা নেওয়া হয়েছে এবং দুজনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।