মৌলভীবাজারে হাওরাঞ্চলে ঈদকে ঘিরে মৌসুমি গরুর খামার


মৌলভীবাজারের হাকালুকি, কাউয়াদিঘীসহ হাওরাঞ্চলের মানুষ বোরো ফসলের উপর নির্ভরশীল। এ বছর ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা। এ ক্ষতি পুষিয়ে কিছুটা লাভের মুখ দেখার জন্য হাওরপাড়ের প্রান্তিক কৃষকদের অনেকেই গড়ে তুলেছেন মৌসুমি গরুর খামার।

হাওরে পর্যাপ্ত ঘাস থাকায় প্রাকৃতিক খাবার খেয়ে বেড়ে উঠা এসব গরুর চাহিদা বেশি। হাওরপাড়ের মৌসুমি খামারিরা আশাবাদী ভালো দাম পাবেন।

তবে আর্থিক সংকটের কথা জানিয়ে তারা বলেন, সহজ শর্তে ঋণ পেলে আরও বেশি লাভবান হতেন।

সরেজমিনে হাকালুকি হাওরপাড় ঘুরে কয়েকজন মৌসুমি খামারি জানান, ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে এপ্রিল-মে মাসে গরু কিনেন তারা। কেউ ৪টা কেউ ৬টা আবার কেউ কেউ ১৪ থেকে ২০টা গরু কিনেছেন। হাওরাঞ্চলে পর্যাপ্ত ঘাস ও খড় থাকায় অন্য কোন খাবার খাওয়াতে হয়নি। ফলে প্রাকৃতিক খাবার খেয়ে বেড়ে উঠেছে এইসব প্রাণী।

খামারিরা জানান, সহজ শর্তে ঋণ পেলে আরও বেশি লাভ করা যেত, দূর হতো অভাব। তারা জানান, এই গরু যেহেতু প্রাকৃতিক খাবার খেয়ে বেড়ে উঠা, তাই এদের চাহিদা বেশি। ভালো দামে গরু বিক্রি করে লাভবান হওয়ার আশা তাদের।

বিভিন্নভাবে দুর্ভোগে থাকা হাওরপাড়ের প্রান্তিক খামারিরা মনে করেন আর্থিক সংকট নিরসনে সহজ শর্তে ঋণ দেয়া হলে আগামীতে খামার থেকে অনেক বেশি লাভ হবে। পরিবারে আসবে সচ্ছলতা, দুর হবে আর্থিক সংকট।

কাউয়াদীঘি হাওরপাড়ের খামারিদের একজন সৈয়দ বয়তুল আলী জানান, আমার ১৪টা গরু আছে, এ বছর ৭টি বিক্রি করব।

তিনি আরও জানান, সরকার বারবার বলে যারা উদ্যোক্তা তাদের ঋণ দেওয়া হবে। কিন্তু আমিসহ অনেকেই সব শর্ত মেনে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকে গিয়ে তা পাইনি।

মৌলভীবাজার জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এবিএম সাইফুজ্জামান জানান, প্রবাসী অধ্যুষিত মৌলভীবাজার জেলায় ঈদুল আজহায় কোরবানির গরুর চাহিদা বেশি থাকে। চাহিদা অনুযায়ী এই জেলায় গরু না থাকায় দেশের অন্যান্য জেলা থেকে গরু এনে চাহিদা পূরণ করা হয়। হাওরাঞ্চলের খামারিসহ অন্যান্য খামারিদেরও প্রকল্পের মাধ্যমে সহযোগিতা করা হচ্ছে। আগামীতে আরও প্রকল্প গ্রহণ করে তাদের সহায়তা করা হবে।