উদাহরণ সৃষ্টির মতো শাস্তি হবে ডিসির: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী


অভিযোগ প্রমাণিত হলে সদ্য ওএসডি হওয়া জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে উদাহরণ সৃষ্টির মতো শাস্তি হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

সচিবালয়ে নিজ দফতরে রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।

এক নারী অফিস সহকারীর সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও প্রকাশের পর রোববার বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয় জামালপুরের ডিসি আহমেদ কবীরকে।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জামালপুরের বিষয়টি অনেকের সৃষ্টিগোচর হয়েছে, এটা অনৈতিক কর্মকাণ্ড। একজন ডিসির যে দায়-দায়িত্ব আছে তা থেকে সরে গিয়ে একটি অনৈতিক কর্মকাণ্ডে যখন দেখেছি, তখন সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দৃষ্টিতে এসেছে। আমরা খুব তড়িৎ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। আমরা তাকে ওএসডি করেছি।’

তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে আমরা সেটি করেছি আপাতত। এরপরে তার বিরুদ্ধে আমাদের যে আইনানুগ ব্যবস্থা আছে, চাকরি বিধি অনুযায়ী আমরা সেই পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই উদাহরণ সৃষ্টি করার মতো পানিশমেন্ট তার (আহমেদ কবীর) হবে। আমাদের চাকরির বিধানে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ রয়ে গেছে। সেটিই হবে। আমরা খুব দ্রুত একটা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারব।’

তিনি বলেন, ‘একটি কমিটি করে সেই কমিটিকে দায়িত্ব দেয়া হবে। কমিটি ভালোভাবে তদন্ত করে, বুঝে, কী ঘটেছে সেখানে, কতটুকু অনৈতিকতা সেখানে হয়েছে, সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করেই কিন্তু এক্সমপ্লিয়ারি আমরা একটা প্রিম্যাটিভ মেজার্স নেব।’

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ তদন্ত কমিটি গঠন করছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সেখান থেকে কমিটি করলেই যথেষ্ট হবে। এগুলো তারাই দেখেন।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমাদের সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যাপারে যথেষ্ট সুযোগ সৃষ্টি করেছি, আমরা কাজকর্ম সহজ ও আরও গতিশীল করার জন্য এবং জনমুখী করার জন্য তাদের অবকাঠামোগত বিভিন্ন রকম সুবিধাদি ইতোমধ্যে প্রদান করেছি। আমরা ব্যুরোক্রেসিকে আন্তর্জাতিক মানের করার জন্য সবদিক থেকে চেষ্টা চালাচ্ছি। যখন আমরা ব্যুরোক্রেসিকে সুন্দরভাবে সাজাচ্ছি এবং নিয়ম-কানুনে বেধে এটা আরও উন্নত করছি, সেই সময় এ রকম একটি ঘটনা সত্যি খুব অনভিপ্রেত।’

‘এটি সত্যি দুঃখজনক ঘটনা। বিষয়টি আমাদের অত্যন্ত আহত করেছে। আমরা তড়িৎ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি, পরবর্তী সিদ্ধান্তও গ্রহণ করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আসলে সিসি টিভি থাকার কথা না ওখানে কোনোভাবে। কিন্তু তার কর্মকাণ্ড তো এটা হওয়ার কথা না, এটাই বড় কথা। সে কী ধরনের কর্মকাণ্ড করবে, তাদের কোড অব ম্যানার্স আছে, এথিকস আছে। সেগুলো অনুযায়ী কিন্তু আমাদের সরকারি কর্মকর্তাদের চলতে হয়।’

ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘একজন ডিসি জেলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সেক্ষেত্রে তার কাছ থেকে উন্নত চরিত্রের একজন মানুষ সবাই প্রত্যাশা করে। তিনি অনুকরণীয় হবেন- সেটিই সবাই প্রত্যাশা করে।’

আহমেদ কবীর শুদ্ধাচার সার্টিফিকেট পেয়েছেন, সেটা প্রত্যাহার করা হবে কিনা- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই সেটি প্রত্যাহার করা হবে।’

অনেক কর্মকর্তার পারসোনাল রুম রয়েছে, এটি থাকবে কিনা- জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের আগামী দিনে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইঙ্গিত দেয়। ফলে বিষয়গুলো যাতে আরও পরিচ্ছন্ন থাকে, কারণ সাধারণত এ ধরনের ঘটনা ঘটে না। এ ধরনের ঘটনা সত্যি আমাদের ব্যুরোক্রেসিতে যথেষ্ট পরিমাণে অস্বস্তি এনেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা চাইব আগামী দিনে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে। নৈতিকতা পরীক্ষা করে আগামী দিনে চারিত্রিক সমস্ত কিছু বিচার-বিশ্লেষণ করে এ সমন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় কর্মকর্তা দেব।’

ওই নারী শাস্তির মধ্যে আসছেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘এখানে যারা আছে তারা সরকারে যদি চাকরি করে থাকে, সরকারি কর্মচারী হয়ে থাকে, তাদের উভয়ের বিচার হবে, উভয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।’


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *