পাঠ্যবইয়ের সঙ্গে পাটের ব্যাগ পাবে শিক্ষার্থীরা

banglashangbad

স্কুল শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যের পাঠ্যবইয়ের সঙ্গে পরিবেশবান্ধব পাটের ব্যাগ দিতে চায় সরকার। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় পাটের ব্যাগ দিতে সম্মত হয়েছে। তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পাট বিষয়ক সমন্বয় কমিটির সভায় পাঠ্যবইয়ের সঙ্গে পাটের ব্যাগ দেয়ার বিষয়টি আলোচিত হয়। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী সভায় সভাপতিত্ব করেন।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈকত চন্দ্র হালদার বলেন, ‘সমন্বয় কমিটির সভায় বিনামূল্যের পাঠ্যবইয়ের সঙ্গে পাটের ব্যাগ দেয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে বই প্রদানকারী শিক্ষা এবং প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার পর। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন।’

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলিয়ে বিনামূল্যের বই পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি। এত বিপুল সংখ্যক ব্যাগ দেয়ার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। এ বিষয়ে শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মত হওয়াটাও জরুরি। প্রয়োজনে পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি স্থানে ব্যাগ দিয়ে দেখা যেতে পারে। ভালো সাড়া মিললে এরপর সারাদেশে চালু হোক।

মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সভায় ইডিএফ ফান্ডের ন্যায় পাটশিল্প উন্নয়নের জন্য ২ ভাগ সুদে ১০ হাজার কোটি টাকার তহবিল তৈরি করার বিষয়ে আলোচনা হয়। এছাড়াও পাটপণ্যে রফতানি ভর্তুকী বৃদ্ধি, বাংলাদেশ জুট গুডস অ্যান্ড এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনভুক্ত (বিজেজিইএ) রফতানিকারকদের রফতানি করা পণ্যের মূল্যের উপর ৫ শতাংশ হারে প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা প্রদান, জুট ব্যাচিং অয়েলের দাম আগের মত নির্ধারণ করা বিষয়ে আলোচনা হয়।

সভায় বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশকে সোনালী আঁশের দেশ হিসেবে রূপান্তর করে পাটের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে সরকার। কৃষকের পাটের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে সরকার সচেষ্ট রয়েছে। জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারের (জেডিপিসি) মাধ্যমে পাটের বহুমুখী ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’

‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০’ সুষ্ঠুভাবে শতভাগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ‘এছাড়াও সব ধরনের কাঁচা পাটের রফতানি উন্মুক্ত রয়েছে। ১৯টি পণ্য মোড়কীকরণের ক্ষেত্রে পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।’

গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ‘বর্তমান সরকার দেশের অভ্যন্তরে পাট ও পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি ও জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে প্রত্যেকটি বিভাগীয় শহরে এবং ঢাকার বড় বড় সপিং মলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বহুমুখী পাটজাত পণ্যের প্রদর্শনী (ডিসপ্লে) সেন্টার ও বিক্রয় কেন্দ্র স্থাপন করার উদ্যোগ নিয়েছে।’

সভায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, বিজেএমসি চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ নাসিম, পাট অধিদফতরের মহা পরিচালক মো. শামসুল আলম, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবু বকর সিদ্দিক ছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, পরিকল্পনা কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং পাট বিষয়ক সমন্বয় কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *